অথবা, আগস্ট প্রস্তাব সম্পর্কে কী জান?
উত্তর: ভূমিকা: ব্রিটিশ ভারতের শাসনতান্ত্রিক ইতিহাসে আগস্ট প্রস্তাব একটি গরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব। ব্রিটিশ সরকার ভারতীয় রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে সমস্যা সমাধানে চেষ্টা এবং ব্রিটিশ শাসনকে দীর্ঘমেয়াদি করার চেষ্টায় অবতীর্ণ হয়। এরূপ পদক্ষেপগুলোর মধ্যে ‘আগস্ট প্রস্তাব’ ছিল অন্যতম।
আগস্ট প্রস্তাব: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ফলাফল ছিল অত্যন্ত ভয়াবহ। প্রায় সর্বত্র এ যুদ্ধের ভয়াবহ প্রভাব প্রতিফলিত হয়। এ যুদ্ধের ফলে জার্মানিসহ বেশ কয়েকটি দেশের পতন ঘটে। যুদ্ধের এ ভয়ঙ্কর মূর্তি ভারতকে গ্রাস করে। তাই সরকার ভারতের বিদ্যমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনকল্পে এক নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেন। যুদ্ধ পরিচালনার ক্ষেত্রে ভারতীয় জনমতকে কাজে লাগানোর কথা ব্রিটিশ সরকার ভাবতে লাগলেন। এ কারণে ব্রিটিশ সরকার ১৯৪০ সালের ৮ আগস্ট ভারত সম্পর্কে তাদের কিছু নীতি সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করেন। এ নীতিমালাকেই আগস্ট প্রস্তাব নামে অভিহিত করা হয়। ভারতের রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক সংকট নিরসনের লক্ষ্যে এবং যুদ্ধ পরিচালনায় ভারতীয় জনমতকে সুসংবদ্ধ করার উদ্দেশ্যে ১৯৪০ সালের ৮ আগস্ট ব্রিটিশ সরকার একটি প্রস্তাব পাস করে। এটিই আগস্ট প্রস্তাব। এই প্রস্তাবে ব্রিটিশ সরকার ভারতকে ডোমিনিয়নের মর্যাদা প্রদান করার উদ্দেশ্য ছিল সংখ্যালঘুদের মতামত গ্রহণ, গণপরিষদের দায়িত্ব ভারতীয়দের উপর ন্যস্ত করা প্রভৃতি।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, ১৯৪০ সালের ৮ আগস্ট প্রস্তাব ছিল ভারতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আগস্ট প্রস্তাব দ্বারা কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের দাবির মধ্যে সমন্বয় সাধন করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত ব্রিটিশ সরকারের নিকটও এটি গ্রহণযোগ্য হয়নি। তবে আগস্ট প্রস্তাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ নতুন নীতিমালা দেখতে পাওয়া যায়। এরূপ পার্লামেন্ট ভারতের জন্য আইন প্রণয়নের ব্যাপারে কার্যত পূর্বেই মতৈক্য প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। ভারতের জন্য আইন প্রণয়নের অধিকার কার্যত: সমর্পন করে যে অধিকার এটি এ যাবৎ নিজের হাতে সংরক্ষণ করেছে।