গাজালি দার্শনিকদের কাফের বলেছেন কেন?

অথবা, গাজালি কর্তৃক দার্শনিকদের কাফের বলার কারণ কী?

অথবা, কোন দৃষ্টিকোণ থেকে গাজালি দার্শনিকদের কাফের বলেছেন?

অথবা, যেসব কারণে গাজালি দার্শনিকদের কাফের বলেছেন তা উল্লেখ কর।

অথবা, গাজালি কর্তৃক দার্শনিকদের কাযের বলার কারণ সংক্ষেপে লেখ।

উত্তর: ভূমিকা: ইমাম আল গাজালি মুসলিম দর্শনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চিন্তাবিদ। ইসলামি শিক্ষার আলোকে তিনি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করেন। তিনি “তাহাফুতুল ফালাসিফা” নামক গ্রন্থে দার্শনিকদের বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন এবং তাদের মতবাদকে ইসলাম বিরোধী হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তিনি দেখিয়াছেন যে, দার্শনিকদের অধিকাংশ মতবাদই ভ্রান্ত।

দার্শনিকদের কাফের বলার কারণ: আল গাজালি ফালাসিফা দার্শনিকদের বিভিন্ন ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ তাহাফুতুল ফালাসিফা গ্রন্থের পরিশিষ্টে দার্শনিকদের কাফের বলার পেছনে তিনটি কারণের কথা উল্লেখ করেছেন-

১. জগতের অনাদিত্ব স্বীকার করা।

২. আল্লাহর বিশেষ জ্ঞান নেই এমন মনে করা।

৩. দৈহিক পুনরুত্থানের বিষয়টি অস্বীকার করা।

ইমাম আল গাজালির মতে, “উপর্যুক্ত তিনটি কারণে বা সমস্যায় তাদেরকে কাফির না বলে উপায় নেই।” আল গাজালি মনে করেন মুসলমানদের মধ্যে বিদআতিদের চেয়েও এসব দার্শনিকদের চরম পদস্খলন ঘটেছে। তাঁর মতে, বিদআতিদের কাফের বললে তাদেরও কাফের বলতে হবে। তাছাড়া, গাজালি যেসব দার্শনিককে কাফের বলেছেন তাদের অনেকেই ব্যক্তিগত জীবনে ইসলামের প্রতি যথেষ্ট দুর্বল ছিলেন। গাজালির মতে, ইসলামের মূলনীতি বা শরিয়ত অমান্য করা-নবী-রাসূলকে মিথ্যাবাদী ও রূপক কথা প্রচারকারীরূপে চিহ্নিত করা কোন মুসলমানের কাজ হতে পারে না। মুসলমানদের কোন দলই এরূপ আকিদা পোষণ করে না।

উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, আল গাজালি একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে দার্শনিকদের কাফের বলেছেন। তিনি দার্শনিকদের অনেক মতবাদ পর্যলোচনা করে দেখান যে, তাদের অনেক মতবাদই সুনিশ্চিত বলে মনে করা যায় না। তাই তিনি দার্শনিকদের বিরুদ্ধে উক্ত অভিযোগ করেন এবং তাদের কাফের বলে আখ্যায়িত করেন।