গান্ধীজির অহিংস আন্দোলন সম্পর্কে কী জান?

অথবা, গান্ধীজির অহিংস আন্দোলন সম্পর্কে ধারণা দাও।

উত্তর: ভূমিকা: মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী এক বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী ছিলেন। তার কর্মপরিধি ও ব্যক্তিত্ব তাকে বিশ্বব্যাপী পরিচিত এনে দিয়েছিল। ভারতীয় রাজনীতি তার আর্বিভাব ছিল আশীবাদস্বরূপ। গান্ধীজি অসাধারণ ব্যক্তিত্ব চারিত্রিক মাধুর্য ও বিবিধ প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। ব্যক্তিত্বের জাদুর বলেই তিনি ভারতের সকল স্তরের জনগণের আস্থাভাজন শ্রেষ্ঠ মানবে পরিণত হন। তার নেতৃত্বে ভারতবর্ষে যেসব আন্দোলন পরিচালিত হয় সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল অহিংস আন্দোলন।

অহিংস আন্দোলন: মহাত্মা গান্ধীর লক্ষ্য ছিল ভারতের স্বরাজ বা স্বাধীনতা। তার নীতি ছিল সত্যগ্রহ বা ন্যায় সংগত অধিকার প্রতিষ্ঠা। গান্ধীজি অহিংস নীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন। ন্যায় ও সত্যের জন্য তিনি প্রাণত্যাগেও প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু হিংসার পথে তিনি কখনো সমস্যার সমাধান চাননি। হিংসা, সন্ত্রাস ও মিথ্যার পথে তিনি স্বাধীনতা চাননি। রিপু ও লোভের উপর কর্তৃত্ব স্থাপন করে ন্যায় ও সত্যের প্রতিষ্ঠাই ছিল তার কাছে প্রকৃত স্বরাজ। প্রকৃতপক্ষে, অহিংস আন্দোলনের অপর নাম সত্যাগ্রহ গান্ধী সত্যাগ্রহের পথ গ্রহণ করেন এ বিশ্বাসে যে অহিংস অস্ত্র দিয়েই হিংসা নিবারণ করা যায়। স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় উত্তরণের শ্রেষ্ঠ কাজ অহিংস পথ। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, অহিংস সন্ত্রাসমূলক পন্থায় শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠা করা যায় না। গান্ধীজি অহিংস পরম ধর্ম জ্ঞান করেছেন। অহিংসার অর্থ ভালবাসা ও কল্যাণ চিন্তা। তার অহিংস আন্দোলন ছিল স্বেচ্ছায় গ্রেফতারি বরণ করবেন, অনশন কাজ করবার বন্ধ এবং ভজনালয়ে মিলিত হয়ে প্রার্থনা পথে অগ্রসর হওয়াই ছিল অসঙ্গ অক্ষম আন্দোলন।

উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, গান্ধীজি ছিল অহিংস আন্দোলনের জনক। গান্ধীর পক্ষেই সম্ভব হয়েছিল অহিংসার অস্ত্র দিয়ে দুর্ধর্ষ ঔপনিবেশিক শক্তিকে ঘায়েল করা। তিনি সংস্কার সংগ্রাম করেছেন বিশ্বের নির্যাতিত মানবতার মুক্তির জন্য। গান্ধীজি অহিংস আন্দোলন ভারতের সুপ্ত চিত্ত শক্তিকে নতুনভাবে জাগ্রত করেছিল।