অথবা, জাতীয় স্বাস্থনীতির প্রয়োজনীয়তা আলোচনা কর।
অথবা, জাতীয় স্বাস্থ্যনীতির তাৎপর্য উল্লেখ কর।
অথবা, জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর।
উত্তর: ভূমিকা : বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি হলো জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি। স্বাস্থ্যসেবাকে প্রতিটি নাগরিকের নাগালের মধ্যে নিয়ে যাওয়াই হলো এই নীতির মূল লক্ষ্য। এ নীতির গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো স্বাস্থ্য খাতে বিদ্যমান সমস্যা
সমাধানের লক্ষ্যে নীতিমালা গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়ন করা।
জাতীয় স্বাস্থ্যনীতির গুরুত্বঃ জাতীয় স্বাস্থ্যনীতির গুরুত্ব বা তাৎপর্য নিম্নে বর্ণনা করা হলোঃ
১. সহজলভ্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা: দেশের জনগণের জন্য সহজলভ্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার উপায় উদ্ভাবন করা স্বাস্থ্যনীতির একটি অন্যতম দিক। এর ফলে সকলে স্বাস্থ্য সুবিধা পাবে।
২. সরকারি চিকিৎসা মানের উন্নয়ন: প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা এবং উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থায় মান গ্রহণযোগ্যতা ও সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
৩. কার্যকর পুষ্টি কর্মসূচি গ্রহণ: জনসাধারণের মধ্যে বিশেষ করে শিশু ও মায়েদের অপুষ্টির হার হ্রাস করা এবং সকল শ্রেণির মানুষের পুষ্টিবৃদ্ধির জন্য কার্যকর ও সমন্বিত কর্মসূচি প্রচার করা যাবে।
৪. শিশু ও মাতৃ-মৃত্যুর হার হ্রাস: স্বাস্থ্যনীতির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো দেশে বিদ্যমান বর্তমান শিশু ও মাতৃ-মৃত্যুর হার হ্রাস করে আগামী পাঁচ বছরে এ হারকে একটি গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে সীমিত করার জন্য যথোপযুক্ত কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।”
৫. হাসপাতালে চিকিৎসকের উপস্থিতি নিশ্চিত করা: প্রতিটি উপজেলা হেলথ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে সার্বক্ষণিক চিকিৎসকের উপস্থিতি ও প্রয়োজনীয় ওষুধপত্রের সরবরাহ নিশ্চিত করা।
৬. প্রজনন স্বাস্থ্যের উন্নয়ন: প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সুযোগ-সুবিধা ও চিকিৎসা ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়ন করার নিমিত্তে স্বাস্থ্যনীতির গুরুত্ব অত্যধিক।
৭. পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি জোরদার করা: স্বাস্থ্যনীতির আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচিকে আরও জোরদার ও গতিশীল করা। এর ফলে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সফল হয়।
৮. প্রতিবন্ধী ও বিকলাঙ্গদের বিশেষ সুবিধাঃ মানসিক প্রতিবন্ধী ও শারীরিক বিকলাঙ্গদের সাথে বয়োবৃদ্ধদের জন্য বিশেষ স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা করা স্বাস্থ্যনীতির অন্যতম দিক।
৯. দরিদ্রদের মধ্যে পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি বাস্তবায়ন: অতি দরিদ্র ও অল্প আয়ের জনগোষ্ঠীর মধ্যে পরিবার পরিকল্পনার কর্মসূচিকে অধিকতর গ্রহণযোগ্য, সহজলভ্য ও কার্যকর করার পন্থা উদ্ভাবন করার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যনীতির ভূমিকা অপরিসীম।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, দেশের স্বাস্থ্যনীতির বিভিন্ন ধারায় তাকালে দেখা যায় যে, এ দেশের জন্য এর প্রয়োজনীয়তা অত্যধিক। এর ফলে দেশের স্বাস্থ্যখাত ও চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটবে এবং সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে।