অথবা, প্লেটো সম্পর্কে কী আন?
অথবা, প্লেটোর পরিচয় দাও।
উত্তরঃ ভূমিকা: বিশ্ব রাষ্ট্র ব্যবস্থার অগ্রগতিতে ও সমাজসভ্যতার উন্নয়নে যেসব মনীষীর অবদান বা চিন্তাধারা বর্তমান সমাজেও দৃষ্টান্তস্বরূপ হয়ে আছে, গ্রিক দার্শনিক প্লেটো ছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম। গ্রিস রাষ্ট্রের অস্থিতিশীলতা, দেশের যুদ্ধাবস্থা প্রভৃতির অবসানকল্পে প্লেটো তাঁর বিখ্যাত ‘The Republic’ গ্রন্থে একটি আদর্শ রাষ্ট্রের বর্ণনা দেন। প্লেটো তাঁর আদর্শ রাষ্ট্রের বর্ণনা করতে গিয়ে তাঁরই গুরু মহাজ্ঞানী, সক্রেটিসের মূলনীতি ‘Virtue is knowledge’ এবং ‘যা আদর্শ তাই বাস্তব’ প্রভৃতি নীতি দ্বারা যথেষ্ট পরিমাণে প্রভাবিত হয়েছেন। মূলত প্লেটো তাঁর ‘The Republic’ গ্রন্থে যে আদর্শ রাষ্ট্রের বর্ণনা দিয়েছেন তার মূল উদ্দেশ্য হলো সুন্দর বা শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন।
প্লেটোর জীবনী: দর্শনের ইতিহাসে প্লেটো (খ্রিস্টপূর্ব ৪২৭-৩৪৭) এক বিশিষ্ট স্থানের অধিকারী। খ্রিস্টপূর্ব ৪২৭অব্দে এথেন্সের এক সম্ভ্রান্ত বংশে প্লেটোর জন্ম। তাঁর বাবা এরিস্টন ও মা পেরিকটিয়ন উভয়েই ছিলেন এক বিশেষ পারিবারিক ও বংশমর্যাদার অধিকারী। প্লেটো যে পরিবারে জন্মেছিলেন শিক্ষাদীক্ষার পক্ষে তা বিশেষ অনুকূল ছিল। তবে যে দার্শনিকের প্রভাব প্লেটোর জীবনে সবচেয়ে বেশি স্পষ্ট তিনি হলেন প্লেটোর শিক্ষক মহামতি সক্রেটিস। প্লেটোর দার্শনিক মত প্রকাশের বাহন ছিল সংলাপ। প্লেটোর গ্রন্থ সংলাপের আকারে লেখা এবং প্লেটোর ডায়ালগ (Dialogues) নামে পরিচিত। প্লেটোর উল্লেখযোগ্য রচনাবলি হলো: ‘এপোলজি’ (Apology), ‘রিপাবলিক’ (Republic), ‘জর্জিয়াস’ (Gorgias), ‘ফিডো’ (Phaedo), ‘লস’ (Laws) প্রভৃতি।
উপসংহার: উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে বলা যায় যে, দার্শনিক চিন্তার বিভিন্ন ক্ষেত্রে বা বিভিন্ন শাখায় তিনি তাঁর প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে যেতে সমর্থ হয়েছেন। জ্ঞান, সত্য ও কল্যাণনিষ্ঠ জীবনের যে আদর্শ তিনি স্থাপন করে গেছেন এর জন্য চিরকাল তাঁর নাম ইতিহাসের পাতায় অম্লান ও ভাস্বর হয়ে থাকবে।