অথবা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিজ্ঞান না কলা? সংক্ষেপে ব্যাখ্যা কর।
অথবা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান কলা না বিজ্ঞান? আলোচনা কর।
অথবা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান কি কলা না বিজ্ঞান? বর্ণনা কর।
উত্তর: ভূমিকা: সৃষ্টির উষালগ্ন থেকেই মানুষ সংঘবদ্ধ হয়ে বসবাস করে আসছে। এ সংঘবদ্ধ জীবন থেকেই সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনের সূত্রপাত। রাষ্ট্রবিজ্ঞান একটি বিজ্ঞান না কলা সে সম্পর্কে নিয়ে যুক্তি দেখানো হলো:
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিজ্ঞান না কলা: রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিজ্ঞান না কলা তা নিয়ে বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। গ্রিক দার্শনিক এরিস্টটল রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে সর্বোচ্চ বিজ্ঞান বলে অভিহিত করে তৎকালীন গ্রিক রাষ্ট্রনৈতিক জীবনের পর্যালোচনায় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ব্যবহার করেন। তাঁর চিন্তাধারায় রাজনীতি একটি স্বাধীন ও স্বতন্ত্র বিজ্ঞান হিসেবে পরিগণিত।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিজ্ঞান না কলা এ সম্পর্কে সবচেয়ে সুন্দর তত্ত্ব দিয়েছেন লর্ড ব্রাইস। তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে একটি প্রগতিশীল বিজ্ঞান বলে অভিহিত করেছেন। পক্ষান্তরে, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বাক্স, কোঁতে, মেইটল্যান্ড এবং অ্যামস রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে বিজ্ঞান বলে মেনে নিতে অসম্মতি জ্ঞাপন করেছেন। তাঁদের মতে, “বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয়বস্তুর পর্যালোচনা সম্ভব নয়। বাকলের মতে, “রাজনীতি বিজ্ঞান হওয়া তো দূরের কথা, কলাবিদ্যা হিসেবেও এটা সর্বনিম্ন স্তরের।” অ্যামস্ এর মতে, “রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু এত ব্যাপক ও জটিল যে, এতে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ব্যবহার সম্ভবপর নয়।”
উপসংহার: উপর্যুক্ত পর্যালোচনা শেষে বলা যায় যে, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিজ্ঞান নয় সত্য কিন্তু গভীরভাবে বিশ্লেষণ করলে একে নিঃসন্দেহে বিজ্ঞান বলা যায়। লর্ড ব্রাইসের মতে, অসম্পূর্ণ বিজ্ঞান হলেও রাষ্ট্রবিজ্ঞান একটি গতিশীল বিজ্ঞান। তবে প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্রবিজ্ঞান সামাজিক বিজ্ঞানের একটি অংশমাত্র।