রাষ্ট্রের উৎপত্তি সম্পর্কে বিধাতার সৃষ্ট মতবাদ সংক্ষেপে আলোচনা কর।

অথবা, রাষ্ট্রের উৎপত্তি সংক্রান্ত ঐশ্বরিক মতবাদটি সংক্ষেপে বর্ণনা কর।

অথবা, সংক্ষেপে রাষ্ট্রের উৎপত্তি সংক্রান্ত বিধাতার সৃষ্টিমূলক মতবাদ বর্ণনা কর।

উত্তরঃ ভূমিকা: রাষ্ট্র মূলত একটি সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। রাষ্ট্র ভিন্ন ভিন্ন অবস্থার প্রেক্ষিতে উৎপত্তি হয়েছে। কালক্রমে মানুষের প্রয়োজনে রাষ্ট্রের উৎপত্তি হয়েছে। রাষ্ট্রের উৎপত্তি প্রসঙ্গে বর্তমান সময় পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যক্তি বিভিন্ন মতবাদ দিয়েছেন। তার মধ্যে বিধাতার সৃষ্ট মতবাদ বা ঐশ্বরিক মতবাদ একটি অন্যতম মতবাদ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।

বিধাতার সৃষ্ট মতবাদ বা ঐশ্বরিক মতবাদ: বিধাতার সৃষ্ট মতবাদ প্রাচীনতম মতবাদের মধ্যে অন্যতম। আবার এটাকে সৃষ্টমূলক মতবাদ হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়। এ মতবাদটি প্রাচীন যুগ ও মধ্যযুগীয় রাষ্ট্রচিন্তার আলোচনায় বিশেষ আলোড়ন সৃষ্টি করে। এ মতবাদের মূল প্রবক্তা St. Augustine, Kebling, Paul Fitmer প্রমুখ। এমনকি মহাভারতেও এ মতবাদের প্রবর্তন লক্ষণীয়।

এ মতবাদ অনুসারে রাষ্ট্র স্বয়ং বিধাতার সৃষ্টি। তিনি মূলত রাষ্ট্রকে সৃষ্টি করে মানুষকে সংঘবদ্ধ হতে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য তিনি একজন রাজা বা শাসকও প্রেরণ করেছেন। এখানে বিধাতা সৃষ্টিকর্তার প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে। মূলত তার নেতৃত্বে রাষ্ট্রব্যবস্থা পরিচালিত হয়। রাজার আদেশই আইন বা বিধান হিসেবে গণ্য করা হয়। এখানে জনগণ বিধাতা প্রেরিত আদেশ মানতে বাধ্য থাকবে। তার নির্দেশ অমান্য করার অর্থ পাপের শামিল।

উপসংহার: উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে আমরা বলতে পারি যে, এ মতবাদে পোপের জয়গান গাওয়া হয়েছে। যেজন্য পরবর্তীতে ঐশ্বরিক মতবাদ নিয়ে ইংল্যান্ডে গৃহযুদ্ধের সূচনা হয়। তবে মধ্যযুগের রাজনীতির ক্ষেত্রে ঐশ্বরিক মতবাদ রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছিল। সেজন্য ঐশ্বরিক মতবাদকে সবাই স্বাগত জানিয়েছিল।