অথবা, লর্ড ডালহৌসির পাঞ্জাব আলোচনা কর। দখল সম্পর্কে
সম্পর্কে অথবা, লর্ড ডালহৌসির পাঞ্জাব দখল স কী বুঝ?
অথবা, লর্ড ডালহৌসির পাঞ্জাব দখলের আলোকে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দাও।
উত্তর: ভূমিকা: ব্রিটিশ শাসনের ইতিহাসে লর্ড ডালহৌসি সাম্রাজ্যবাদী শাসক হিসেবে একটি বিশিষ্ট স্থান অধিকার করে আছেন। ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ ভারতীয় উপমহাদেশে যে সকল গভর্নর জেনারেল প্রেরণ করেছেন তিনি ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম। আকাঙ্ক্ষা কিংবা কঠোর পরিশ্রম কোনো ক্ষেত্রেই তাকে কেউ পরাস্ত করতে পারত না। রাজ্য বিস্তারের ক্ষেত্রে পাঞ্জাব দখল ছিল তার সাম্রাজ্যবাদী নীতিরই চরম বহিঃপ্রকাশ।
লর্ড ডালহৌসির পাঞ্জাব দখল পাঞ্জাবের রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার সুযোগে লর্ড ডালহৌসি শিখ রাজ্যে হস্তক্ষেপ করেন। পাঞ্জাবের নাবালক মহারাজা দিলীপ সিংহ ব্রিটিশ প্রভাবাধীনে থাকলেও শিখ শক্তি খর্ব হয়নি। শিখদের সাথে ব্রিটিশদের সংঘর্ষের মূলে ছিল মুলতানের শাসনকর্তা দেওয়ান মুলরাজের স্বাধীনভাবে রাজ্য শাসন। পাঞ্জাবের অধীনে থাকলেও তিনি লাহোরের ব্রিটিশ রেসিডেন্টের নির্দেশ মোতাবেক আয়-ব্যয়ের হিসাব দাখিলে অসম্মতি জানিয়ে পদত্যাগ করেন। তার স্থলে নতুন শাসনকর্তাকে মুলতানে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য লাহোরের রেসিডেন্স ওগনিউ এবং এন্ডারসন নামক দু’জন ইংরেজ কর্মচারী একটি বাহিনীসহ অভিযান করেন। মুলরাজ ১৮৫৮ সালে এ দু’জন ব্রিটিশ কর্মচারীকে হত্যা করে মুলতানে স্বীয় কর্তৃত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন। এর ফলে পাঞ্জাবের শিখ সৈন্যগণ বিদ্রোহ ঘোষণা করে। এ সুযোগে আফগানগণ পেশওয়ার পুনরুদ্ধারের প্রয়াস পায়। ১৮৪৯ সালে ডালহৌসি শিখদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। এ যুদ্ধে প্রথম দিকে শিখরা সাফল্য লাভকরলেও গুজরাটের যুদ্ধে শিখরা সম্পূর্ণরূপে পরাজিত হয়ে পলায়ন করতে বাধ্য হয়। অতঃপর ডালহৌসি ১৮৪৯ সালের ৩০ মার্চ এক ঘোষণার দ্বারা পাঞ্জাব ব্রিটিশ সাম্রাজ্য ভুক্ত করেন।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, লর্ড ডালহৌসি সাম্র। জা বিস্তারে যুদ্ধনীতি অবলম্বন করেন। পাঞ্জাবের রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার সুযোগে লর্ড ডালহৌসি শিখ রাজ্যে হস্তক্ষেপ করেন। ১৮৪৯ সালে তিনি শিখদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে সেনাপতি লর্ড গাফকে পাঞ্জাবে পাঠান। শিখদের সাথে তিনি সফল হতে না পারলেও চেনাবের নিকট শিখ সৈন্যগণ পর্যুদস্ত হয়ে আফগানিস্ত মনের দিকে পলায়ন করে। এভাবে পাঞ্জাব দখল হলে ব্রিটিশ রাজ্যের সীমানা উত্তর পশ্চিম সীমান্ত পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করে।