লর্ড ডালহৌসির কুশাসনের অজুহাতে পররাজ্য দখল সম্পর্কে কি জান?

অথবা, লর্ড ডালহৌসির কুশাসনের অজুহাতে পররাজ্য দখল বলতে কী বুঝ?

অথবা, লর্ড ডালহৌসির কুশাসনের অজুহাতে পররাজ্য দখল সম্পর্কে আলোচনা কর।

অথবা, লর্ড ডালহৌসির কুশাসনের অজুহাতে পররাজ্য দখল সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ধারণা দাও।

উত্তর: ভূমিকা: ব্রিটিশ শাসনের ইতিহাসে লর্ড ডালহৌসি সাম্রাজ্যবাদী শাসক হিসেবে একটি বিশিষ্ট স্থান অধিকার করে আছেন। ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ ভারতীয় উপমহাদেশে যে সকল গভর্নর জেনারেল প্রেরণ করেছেন তিনি ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম। তিনি শুধুমাত্র সাম্রাজ্য বিস্তারই করেননি বরং বিভিন্ন ধরনের কৃতিত্বপূর্ণ কার্যাবলি সম্পাদন করেছেন। তিনি সাম্রাজ্য বিস্তারের দ্বিতীয় নীতি হিসেবে তিনি কুশাসনের অজুহাতে দেশীয় রাজ্য দখল নীতি প্রয়োগ করেন।

কুশাসনের অজুহাতে পররাজ্য দখল: সাম্রাজ্য বিস্তারের দ্বিতীয় নীতি হিসেবে তিনি এটি প্রয়োগ করেন। এ নীতির দ্বারা তিনি নিম্নোক্ত রাজ্যগুলো সাম্রাজ্যভুক্ত করেন:

১. অযোধ্যা: ১৮৫৬ সালে কুশাসনের অভিযোগে লর্ড ডালহৌসি অযোধ্যার নবাব ওয়াজেদ আলীকে সিংহাসনচ্যুত করে অযোধ্যা রাজ্যটি দখল করেন। লর্ড ডালহৌসি প্রবর্তিত ‘অধীনতামূলক মিত্রতা’ নীতির জন্য অযোধ্যার নবাব ক্ষমতাহীন হয়ে পড়েছিলেন। শাসনের ক্ষমতা নবাবের হাতে থাকলেও প্রয়োগে নবাবের তেমন কোনো ক্ষমতা না থাকায় রাজ্যে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এরূপ পরিস্থিতিতে কুশাসনের অভিযোগ তুলে লর্ড ডালহৌসি রাজ্যটি দখল করেন।

২. বেরার: ‘অধীনতামূলক মিত্রতা’ নীতি অনুযায়ী হায়দ্রাবাদের নিজাম তথায় একদল ইংরেজ সৈন্য মোতায়েন রাখার এবং উক্ত সেনাবাহিনীর খরচ বহনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল। কিন্তু ১৮৫৩ সালে মোতায়েনকৃত ইংরেজ সৈন্যবাহিনীর ব্যয় বহনে নিজাম অক্ষম হলে লর্ড ডালহৌসি হায়দ্রাবাবাদের অন্তর্ভুক্ত বেরার প্রদেশটি দখল করেন।

উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, ব্রিটিশ আধিপত্য বিস্তারের ঘৃণ্য পদক্ষেপ হিসেবে লর্ড ডালহৌসি রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা ও কুশাসনের অজুহাতে কতিপয় দেশীয় রাজ্য অধিকার করেন। ১৮৫৩ সালে মেবারে মোতায়েন ইংরেজ সৈন্যবাহিনীর ব্যয় বহন করতে নিজাম অক্ষম হলে লর্ড ডালহৌসি এ রাজ্য অধিকার করেন। কুশাসনের অজুহাতে অযোদ্ধা দখল করেন। লর্ড ডালহৌসির সাম্রাজ্যবাদী সম্প্রসারণ নীতির প্রকৃষ্ট উদাহরণ।