লাহোর প্রস্তাবের মূল বিষয়সমূহ আলোচনা কর।

অথবা, লাহোর প্রস্তাবের মূল বিষয়বস্তু কি ছিল?

অথবা, লাহোর প্রস্তাবের মূল বক্তব্য কি ছিল?

অথবা, লাহোর প্রস্তাবের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় কি ছিল?

উত্তর: ভূমিকা: আজকের যে, স্বাধীন বাংলাদেশে আমরা বসবাস করছি তার পূর্ব ইতিহাস বিবেচনা করলে বলা যায় লাহোর প্রস্তাবই এই স্বাধীনতার বীজ বপন করেছিল। ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাবের কারণেই বাঙালি স্বাধীন সার্বভৌম স্বাধীন হয়। এক কথায় যদি বলা হয় এটা বাঙালির জন্য ছিল আশীর্বাদপূর্ণ প্রস্তাব।
লাহোর প্রস্তাবের মূল বিষয়সমূহ:

(ক) ভৌগোলিক অবস্থান অনুযায়ী সন্নিহিত স্থানসমূহকে অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে।

(খ) এসব অঞ্চলকে প্রয়োজন মতো সীমা পরিবর্তন করে এমনভাবে গঠন করতে হবে যাতে ভারতবর্ষে উত্তর-পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলের যেসব স্থানে মুসলমানগণ সংখ্যাগরিষ্ঠ সে অঞ্চলসমূহে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা যায়।

(গ) স্বাধীন রাষ্ট্রসমূহের অঙ্গরাজ্যগুলো হবে স্বায়ত্তশাসিত ও সার্বভৌম।

প্রথম প্রস্তাবে বলা হয়, “নিখিল ভারত মুসলিম লীগের এ অধিবেশনের সুনিশ্চিত অভিমত এই যে, কোনো সাংবিধানিক পরিকল্পনা এদেশে কার্যকর করা যাবে না বা মুসলমানদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না, যদি তা নিম্নরূপ মূলনীতির উপর পরিকল্পিত না হয়।

দ্বিতীয় প্রস্তাবে বলা হয় “এসব অঞ্চলের সংখ্যালঘুদের ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, শাসনতান্ত্রিক এবং অন্যান্য অধিকার ও স্বার্থ-সংরক্ষণের জন্য তাদের সাথে পরামর্শ করে যথোপযুক্ত কার্যকরি ও বাধ্যতামূলক রক্ষাকবচের ব্যবস্থা শাসনতন্ত্রে করতে হবে। ভারতবর্ষে মুসলমানগণ যেসব স্থানে সংখ্যালঘু সেসব স্থানে তাদেরও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, শাসনতান্ত্রিক এবং অন্যান্য অধিকার ও স্বার্থ-সংরক্ষণের জন্য তাদের সাথে পরামর্শ করে যথোপযুক্ত কার্যকরি ও বাধ্যতামুলক রক্ষাকবচের ব্যবস্থা শাসনতন্ত্র করতে হবে।”

উপসংহার: লাহোর প্রস্তাবে আরো বলা হয়, প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র, যোগাযোগ ও প্রয়োজন মতো অন্যান্য বিষয়ে সর্বক্ষমতা সংশ্লিষ্ট অঞ্চলগুলোর হাতে ন্যস্ত থাকবে।