সেন্ট অগাস্টিনের মানুষ সম্পর্কিত ধারণা সংক্ষেপে ব্যাখ্যা কর।

অথবা, সেন্ট অগাস্টিনের মানুষ সম্পর্কিত ধারণা বলতে কী বুঝ?

অথবা, সেস্ট অগাস্টিনের মানুষ সম্পর্কিত মতবাদ সংক্ষেপে আলোচনা কর।

অথবা, সেন্ট অগাস্টিন মানুষ সম্পর্কে কী ধারণা পোষণ করেছেন সংক্ষেপ লিখ।

উত্তরঃ ভূমিকা: মধ্যযুগের রাষ্ট্রচিন্তার সূচনালগ্নে যেসব মনীষীর আবির্ভাব ঘটেছিল, তাদের মধ্যে সেন্ট অগাস্টিন অন্যতম। তাঁর রাষ্ট্রচিন্তার প্রসার ঘটার ক্ষেত্রে খ্রিস্টধর্ম বিশেষ ভূমিকা রাখে। রোমান সাম্রাজ্যের পতনের সঙ্গে খ্রিস্টধর্মের স্বীকৃতি এবং বহু দেববাদের প্রতি ধিক্কার তিনি সমর্থন করেন নি। তিনি সেন্ট অ্যাড্রোজ এর নিকট দীক্ষা নেন। দীক্ষা গ্রহণের পর অগাস্টিন খ্রিস্টধর্ম সম্পর্কে প্রচুর পড়াশোনা করেন, বহু দেববাদীদের রোমান শক্তির পতন সম্পর্কে সমালোচনার জবাব দেয়ার জন্য তিনি তৈরি হতে থাকেন। এভাবে খ্রিস্টধর্মকে নতুন আলোকে বিচার করার জন্য অগাস্টিন নিজেকে গড়ে তোলেন।

মানুষ সম্পর্কে তাঁর ধারণা : মানুষ সম্পর্কে সেন্ট অগাস্টিনের ধারণা বাইবেলীয়। সৃষ্টিকর্তা মানুষকে দু’টি বৈশিষ্ট্য দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। একটি ‘সু’ এবং অপরটি ‘কু’। এ পৃথিবীর জীবনে মানুষকে এ দু’টির যে কোনটি অনুশীলন দিয়েছেন স্বাধীনতা। যে যে বৈশিষ্ট্যাবলম্বী হবে, তার পরিণামও তাই হবে। ‘কু’ পার্থিব স্বার্থ, স্বার্থকেন্দ্রিক এবং ‘সু’ রাজনৈতিক কল্যাণমুখী। মানুষের দু’টি দিক রয়েছে। একটি দৈহিক এবং অপরটি আত্মিক। দৈহিক ‘কু’ অনুসারী এবং আত্যা ‘সু’ অনুসারী। ‘কু’ খারাপের প্রতি আকৃষ্ট করে। অন্যদিকে ‘সু’ ভালোর প্রতি আকৃষ্ট করে।

অগাস্টিন মনে করেন, “মানুষ যখন তার পবিত্র আত্মার নির্দেশ মানতে অস্বীকার করে, তখনই তার অধঃপতন শুরু হয়।” মানুষ যখন পার্থিব সুখ স্বাচ্ছন্দ্যে বিভোর হয়ে পড়ে তখন তার পক্ষে সৎ থাকা বা সৎ হওয়া সম্ভব হয় না।

উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, সেন্ট অগাস্টিনের রাষ্ট্রদর্শন মধ্যযুগে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। অগাস্টিন প্রথমে তার বাবার ধর্ম প্যাগান পরবর্তীতে তার মাতার ধর্ম খ্রিস্ট ধর্মের অনুসারী হন। ইউরোপের মধ্যযুগীয় রাষ্ট্রচিন্তার প্রধানতম বৈশিষ্ট্য ছিল রাজা ও যাজকের মধ্যকার দ্বন্দ্ব। যেটা রাজার পরিবর্তে গির্জার কর্তৃত্বকে অধিক প্রাধান্য দিয়েছেন।