সেন্ট টমাস একুইনাসের শাশ্বত আইন সম্পর্কে সংক্ষেপে ব্যাখ্যা কর।

অথবা, শাশ্বত আইন সম্পর্কে সেন্ট টমাস একুইনাসের ধারণা সংক্ষেপে বর্ণনা কর।

অথবা, একুইনাসের মতে, ‘শাশ্বত আইন’ কী?

অথবা, সেন্ট টমাস একুইনাস শাশ্বত আইন সম্পর্কে কী মত পোষণ করেছেন? সংক্ষেপে লিখ।

অথবা, সেন্ট টমাস একুইনাসের শাশ্বত আইন সম্পর্কে যা জন লিখ।

উত্তর: ভূমিকা: মধ্যযুগের রাষ্ট্রে যখন এক চরম স্থবির ও বিশৃঙ্খল অবস্থায় কাটিয়েছিল যেখানে রাজতন্ত্র, রাজনীতি ও পোপতন্ত্র পরস্পর পরস্পরের সংঘর্ষে উপনীত ছিল সে আগ্নেয়গিরির লাভামুখে বসে যিনি উপরিউক্ত তিনের সমন্বয় গড়ে তোলার পক্ষে ছিলেন নিবেদিত, তিনি হলেন মধ্যযুগের শ্রেষ্ঠ দার্শনিকদের মধ্যে অন্যতম দার্শনিক সেন্ট টমাস একুইনাস। তিনি সিসিলি ও কাম্পনিয়া রাজ্যের উপকণ্ঠে রোক্কাসিকা নামক স্থানে ১২২৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন।

শাশ্বত আইন (Eternal Law): শাশ্বত আইন বিশ্ব জাহানের একটি অংশবিশেষ। শাশ্বত আইন হলো এমন আইন যা বিশ্ব স্রষ্টা ও প্রভু কর্তৃক বিঘোষিত এবং যার দ্বারা বিশ্বের সর্বত্র সবকিছু পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক সেবাইনের অভিমতটি গ্রহণযোগ্য। তিনি বলেছেন, “It is the eternal plan of divine wisdom by which the whole creation is ordered.”

একুইনাসের মতে, “এটা ঈশ্বরের প্রত্যক্ষ নির্দেশের প্রেক্ষিতে চিরন্তন সত্য যার ফলশ্রুতিস্বরূপ সমুদয় সৃষ্টিমণ্ডল।” শাশ্বত আইন সকল মানবিক আইনের উর্ধ্বে এবং সার্বিকভাবে তা মানুষের জ্ঞানের উর্ধ্বে।

সেবাইনের ভাষায় যদিও একুইনাসের শাশ্বত আইন মানুষের দৈহিক প্রকৃতির উর্ধ্বে এবং সামগ্রিকভাবে বাইরে কিন্তু তা মানুষের কাছে অপরিচিত নয়।

সৃষ্টিকর্তার প্রজ্ঞা ও সদাচার মানুষের মধ্যে প্রতিফলিত এবং ক্ষমতাবলে সে শাশ্বত আইনে অংশগ্রহণ করতে পারে। অতএব, শাশ্বত আইনকে সমাজ বহির্ভূত কোন বিষয় বলে ধারণা করা উচিত নয়।

উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, একুইনাস আইনের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। তিনি মনে করতেন, আইনের কর্তৃত্ব সহজাত এবং তা মানবিক কারণে উৎকলিত নয়। তিনি পার্থিব আইন ঐশ্বরিক আইনকে সম্পৃক্তকরণে সচেষ্ট হয়েছেন। একুইনাস মূলত ঐশ্বরিক আইনের উপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।