স্যার সৈয়দ আহমদ খানের সামাজিক সংস্কারসমূহ সংক্ষেপে আলোচনা কর।

অথবা, স্যার সৈয়দ আহমদ খানের সামাজিক সংস্কারসমূহ সম্পর্কে সংক্ষেপ ব্যাখ্যা দাও।

অথবা, স্যার সৈয়দ আহমদ খানের সামাজিক সংস্কারসমূহ সম্পর্কে কী জান?

উত্তর: ভূমিকা: ভারতীয় মুসলমানদের পুনর্জাগরণের ইতিহাসে স্যার সৈয়দ আহমদ খান একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে পরিচিত। ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠিত হবার পর মুসলমানরা যে চরম দুঃবস্থায় পতিত হয় তা থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য আলোকবর্তিকা হাতে এগিয়ে আসেন স্যার সৈয়দ আহমদ খান। তিনি আলীগড় আন্দোলনের মাধ্যমে মুসলমান সমাজে নবজাগরণের সূচনা করেন।

স্যার সৈয়দ আহমদ খানের পরিচয়: স্যার সৈয়দ আহমদ খান ১৮১৭ সালের ১৭ অক্টোবর দিল্লিতে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম সৈয়দ মুহম্মদ তর্কী। ইংরেজ সরকারে কর্মচারী হিসেবে তিনি চাকরি জীবন শুরু করেন।

সৈয়দ আহমদ খানের সামাজিক সংস্কারসমূহ : অসংখ্য সামাজিক সংস্কারের উদ্যোক্তা ছিলেন স্যার সৈয়দ আহমদ খান। তিনি গঠনমূলক সংস্কার প্রবর্তনের আশ্চর্য ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। একজন প্রগতিশীল করে তুলতে তার অন্ত ছিল না। “তাহজীব উল আখলাক” নামে একটি পত্রিকা প্রকাশের মাধ্যমে তিনি প্রাচিন পন্থিদের সামাজিক গোঁড়ামি ও কুসংস্কার কঠোর ভাবে আক্রমণ করেন। তিনি মুসলিম সমাজে নারীদের পর্দা প্রথা, অবরোধ বাস এবং বাল্য বিবাহের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি নারী শিক্ষার উপর বিশেষ ভাবে জোর দেন। তিনি মুসলমানদেরকে স্মরণ করিয়ে দেন যে, ইসলাম ধর্ম বিশ্বাস অনুযায়ী মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেস্ত। তিনি দাস প্রথারও বিরোধিতা করেন। তিনি মুসলমানদের আত্ম উন্নতির জন্য মধ্যযুগীয় আচার আচরণ ও চিন্তাধারা বর্জন করার পরামর্শ দেন।।

উপসংহার: আলীগড় আন্দোলনই মুসলিম জাতীয়তার অবতারণা করে স্বাধিকার ও স্বাধীনতা অর্জনের সংগ্রামে মুসলমানদের জাগ্রত ও অনুপ্রাণিত করে। আরও বলা যায় যে, এটা মুসলমানদের পৃথক ও একক স্বাধীন সত্ত্বা লাভের পটভূমি রচনা করেছিল।