১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন অনুযায়ী আইনসভাগুলোর ক্ষমতা সংক্ষেপে লিখ।

অথবা, ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন অনুযায়ী আইনসভার ক্ষমতা ও কার্যাবলি লিখ।

উত্তর: ভূমিকা: ভারতে ব্রিটিশ শাসনের শুরু থেকে ভারতীয় জনসাধারণের মধ্যে বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন চলছিল। এ আন্দোলনকে স্তিমিত করার জন্য এক পর্যায়ে ব্রিটিশ সরকার দায়িত্বশীল শাসনব্যবস্থা প্রবর্তনের অজুহাত দেখিয়ে ১৯০৯ সালে আইন পাস করে। ১৯০৯ সালের আইন দায়িত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হলে এক দশক পর আবার ১৯১৯ সালে মন্টেগু চেমসফোর্ড এর রিপোর্টের আলোকে আইন প্রণয়ন করা হয়। কিন্তু দেখা যায় তাও ব্যর্থ হয়। পরে ১৯৩৫ সালে আবার একটি আইন প্রণয়ন করা হয় এবং স্বায়ত্ত্বশাসনের নিশ্চয়তা দেয়া হয়। এতে আইনসভাগুলোকে কিছু ক্ষমতা দেয়া হয়।

আইনসভাগুলোর ক্ষমতা : কেন্দ্রীয় কিংবা প্রাদেশিক আইনসভাগুলো আইন প্রণয়নকারী সার্বভৌম সংস্থা ছিল না।
কেননা গভর্নর জেনারেল এবং গভর্নরগণ আইনসভা কর্তৃক প্রণীত আইনে অবাধে ভেটো প্রদান করতে কিংবা আইন পরিষদের যে কোনো বিলের আলোচনা স্থগিত করে দিতে কিংবা আইনসভাকে উপেক্ষা করে গভর্নর জেনারেলের বা গভর্নরের আইন প্রণয়ন করতে এবং জরুরি পরিস্থিতিতে অধ্যাদেশ জারি করতে এবং প্রয়োজনে আইনসভা ভেঙে দিতে পারতেন। তাছাড়া কতকগুলো বিষয়ের উপর অনুমতি ছাড়া কোন বিল আইনসভায় উত্থাপন করা যেতনা, উপরন্তু কেন্দ্রীয় বাজেটের ৮০% এবং প্রাদেশিক বাজেটের ৭৫% অর্থের উপর যথাক্রমে গভর্নর জেনারেল কিংবা প্রাদেশিক গভর্নরের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ ছিল। উল্লেখ্য যে, বাজেটের অবশিষ্ট অংশের উপর যদিও আইনসভার নিয়ন্ত্রণ ছিল তথাপি গভর্নর জেনারেল এবং গভর্নর আইনসভা কর্তৃক বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ হ্রাস বা বৃদ্ধি করতে পারতেন।

উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনে যে দায়িত্বশীল সরকার ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে তা ভারতের শাসনতান্ত্রিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে খুবই’ গুরুত্বপূর্ণ। যদিও তা শুধু কাগজ কলমের মাঝেই সীমাবদ্ধ ছিল। কারণ আদৌ তা বাস্তবায়ন করা হয়নি।