অথবা, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে স্যার সৈয়দ আহমদ খানের অবদান সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।
অথবা, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে স্যার সৈয়দ আহমদ খানের ভূমিকা সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা কর।
অথবা, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে স্যার সৈয়দ আহমদ খানের তাৎপর্য সম্পর্কে সংক্ষেপে বিবরণ দাও।
অথবা, ভারতীয় মুসলমানদের পুনর্জাগরণে স্যার সৈয়দ আহমদ খানের অবদান মূল্যায়ন কর।
উত্তর: ভূমিকা: ভারতীয় মুসলমানদের পুনর্জাগরণের ইতিহাসে স্যার সৈয়দ আহমদ খান একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে পরিচিত। ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠিত হবার পর মুসলমানরা যে চরম দুঃবস্থায় পতিত হয় তা থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য আলোকবর্তিকা হাতে এগিয়ে আসেন স্যার সৈয়দ আহমদ খান। তিনি আলীগড় আন্দোলন এর মাধ্যমে মুসলমান সমাজে নবজাগরণের সূচনা করেছিলেন।
এস্যার সৈয়দ আহমদ খানের পরিচয়: স্যার সৈয়দআহমদ খান ১৮১৭ সালের ১৭ অক্টোবর দিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম সৈয়দ মোস্তাকী খাঁ। ইংরেজ সরকারের কর্মচারী হিসেবে তিনি চাকরি জীবন শুরু করেন।
স্যার সৈয়দ আহমদের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অবদান : প্রথম দিকে স্যার সৈয়দ আহমদ হিন্দুদের সাথে মিলিত ভাবে রাজনীতি করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি রাজনীতির ক্ষেত্রে উগ্র ও গোঁড়াপন্থি হয়ে ওঠেন। ১৮৮০ দশকে এসে তিনি ঘোষণা দেন যে, হিন্দু ও মুসলমানদের রাজনৈতিক স্বার্থ এক নয় বরং পরস্পর বিরোধী। ১৮৮৫ সালে ভারতে জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি কয়েকটি কারণে এর বিরোধিতা করেন। তিনি মনে করতেন এটি মূলত এবং মুখ্যত হিন্দু সংগঠন।
রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে কংগ্রেসের সাথে মুসলমানরা চলতে থাকলে মুসলমানদের প্রতি ব্রিটিশ রাজ্যের অবিশ্বাস সৃষ্টি হবে এবং তা মুসলমান সমাজের জন্য দুর্ভাগ্য বয়ে আনবে। ভারতের । প্রতিনিধিত্ব প্রথা প্রতিষ্ঠান প্রবর্তনের আশঙ্কায় স্যার সৈয়দ আহমদ কংগ্রেসের বিরোধীতা করেন। তিনি জাতীয় কংগ্রেসের । বিরুদ্ধে ৩টি সংস্থা স্থাপন করেন।
(ক) এডুকেশনাল কংগ্রেস,
(খ) ইউনাইটেড প্রেটিয়াটিক এসোসিয়েশন এবং
(গ) মোহামেডান অ্যাংলো ওরিয়েন্টাল ডিফেন্স এসোসিয়েশান।
এ গুলোর মাধ্যমে স্যার সৈয়দ আহমদ খান মুসলমানদের রাজনৈতিক চেতনা সম্পন্ন করে তুলেছিলেন।
উপসংহার: আলীগড় আন্দোলনই মুসলিম জাতীয়তার অবতারণা করে স্বাধিকার ও স্বাধীনতা অর্জনের সংগ্রামে মুসলমানদের জাগ্রত ও অনুপ্রাণিত করে। আরও বলা যায় যে, এটা মুসলমানদের পৃথক ও একক স্বাধীন সত্তা লাভের পটভূমি রচনা করেছিল।