অথবা, স্যার সৈয়দ আহমদের ধর্মীয় সংস্কারসমূহ সংক্ষেপে বিবরণ দাও।
অথবা, স্যার সৈয়দ আহমদের ধর্মীয় সংস্কারসমুক সম্পর্কে কী জান?
অথবা, স্যার সৈয়দ আহমদের ধর্মীয় সংস্কারসমূহ সম্বন্ধে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: ভূমিকা: ভারতীয় মুসলমানদের পুনর্জাগরণের ইতিহাসে স্যার সৈয়দ আহমদ খান একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র। ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠিত হবার পর মুসলমানরা যে চরম দুঃবস্থায় পতিত হয় তা থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য আলোকবর্তিকা হাতে এগিয়ে আসেন স্যার সৈয়দ আহমদ খান। তিনি আলীগড় আন্দোলনের মাধ্যমে মুসলমান সমাজে নবজাগরণের সূচনা করেছিলেন।
স্যার সৈয়দ আহমদ খানের পরিচয়: স্যার সৈয়দ আহমদ খান ১৮১৭ সালের ১৭ অক্টোবর দিল্লিতে এক সম্ভান্ত মুসলিম পরিবারে সরকারের একজন কর্মচারী হিসেবে তিনি চাকরি জীবন শুরু করেন। জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম সৈয়দ মোস্তাকী খাঁ।
স্যার সৈয়দ আহমদের ধর্মীয় সংস্কার: ধর্মীয় ক্ষেত্রে স্যার সৈয়দ আহমদ খান ইসলাম ও খৃস্টান ধর্মের মৌল সামঞ্জস্যের কথা তুলে ধরেন। ধর্মীয় সহিষ্ণুতায় তার বিশ্বাস ছিল অগাধ। তিনি বিশ্বাস করতেন ধর্ম মানুষের একান্ত ব্যাপার। ধর্মীয় গোঁড়ামি তাকে আহত করত। কোরআনের প্রতি প্রত্যয়নিষ্ঠ বিশ্বাসে তিনি অবিচল ছিলেন। তিনি চাইতেন কোরআন যুক্তি নির্ভর ব্যাখ্যা ও সত্যেপলব্ধি ঘটুক। একনিষ্ঠ সমাজ সংস্কারক হিসেবে তিনি ইসলামের সাথে বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারার আপোস রক্ষা করার পক্ষপাতি ছিলেন। ইসলামের সহজ সরল ও চিরন্তন রূপ বিশ্লেষণে তিনি কোরআন ব্যতীত অন্য কোনো শাস্ত্রে আনুগত্য স্বীকার করেননি। এমনকি সুন্নত এরও নয়। ধর্ম সম্পর্কে তার এরূপ মতামতের দরুন তার বিরুদ্ধাচরণ কারীরা তাকে মাহেদী বা নেচারী বলে আখ্যা দেয়।
উপসংহার আলীগড় আন্দোলনই মুসলিম জাতীয়তার অবতারণা করে স্বাধিকার ও স্বাধীনতা অর্জনের সংগ্রামে মুসলমানদের জাগ্রত ও অনুপ্রাণিত করে। আরও বলা যায় যে, এটা মুসলমানদের পৃথক ও একক স্বাধীন সত্তা লাভের পটভূমি রচনা করেছিল।