ক্রিপস প্রস্তাবের গুরুত্ব কি ছিল?

অথবা, ক্রিপস প্রস্তাবের প্রয়োজনীয়তা লিখ।

অথবা, ক্রিপস প্রস্তাবের তাৎপর্য উল্লেখ কর।

উত্তর : ভূমিকা: মুসলিম লীগ যখন ভারতে মুসলমানদের জন্য পৃথক এক আবাসভূমি প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় সংকল্প এবং কংগ্রেস ভারতকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষ্যে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত তখন দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের গতিধারা এক নাটকীয় রূপ পরিগ্রহ করে। ১৯৪২ সালের ২৩ মার্চ ব্রিটেনের অর্থমন্ত্রী স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপস ভারতীয় নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনার জন্য কয়েকটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব নিয়ে ভারতে আসেন। ১৯৪২ সালের ৩০ মার্চ তাঁর প্রস্তাব জনসমক্ষে প্রকাশিত হয়। এগুলোকে ব্রিটিশ যুদ্ধ কেবিনেটের প্রস্তাবও বলা হয়।

ক্রিপস প্রস্তাবের গুরুত্ব: বিভিন্ন কারণে ক্রিপস প্রস্তাব ব্যক্ত হলেও প্রস্তাবে যে কিছু ইতিবাচক দিক ছিল তা অস্বীকার করা যায় না।

১. এ প্রস্তাবে সর্বপ্রথম ভারতকে ডোমিনিয়নের মর্যাদা লাভের অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

২. ভারত কমনওয়েলথভুক্ত থাকবে কি থাকবে না এ অধিকার ভারতের অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

৩. এ প্রস্তাবে ভারতীয়দের তাদের সংবিধান প্রণয়নের পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়া হয়।

৪. এ প্রস্তাবে সর্বপ্রথম ভারত ইউনিয়ন হতে প্রদেশগুলোর বিচ্ছিন্ন হওয়ার অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়া হয়। ফলে মুসলিম লীগের পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা উজ্জ্বলতর হয়।

উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, ১৯৪২ সালের ক্রিপস প্রস্তাব ১৯৪০ সালের আগস্ট প্রস্তাবের তুলনায় অনেকগুণে বেশি অগ্রসর ছিল। এ প্রস্তাবের ফলে ব্রিটিশ সরকার ভারতীয়দের উপর অধিক পরিমাণে আস্থা স্থাপন করেন। এটা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। ড. পট্টভট তাই লিখেছেন যে, “ক্রিপস প্রস্তাবটি বিভিন্ন রুচির মানুষের জন্য বিচিত্র স্বাদে আকর্ষণীয়। ব্রিটিশ সরকার কংগ্রেসের দু’টো দাবি মেনে নেন- ডোমিনিয়ন মর্যাদা এবং সাংবিধানিক পরিষদ গঠন।