জাতীয়তাবাদ কাকে বলে?

অথবা, জাতীয়তাবাদের সংজ্ঞা দাও।

উত্তরঃ ভূমিকা: জাতি হলো এমন এক জনসমাজ যা ক্রমবিকাশের সাথে সাথে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। অর্থাৎ জনসমাজের চূড়ান্ত রূপ। আর ঐ জাতি যখন নিজেদের ইচ্ছেমত কোন জীবনপ্রণালী তৈরি করে বা কোন বিশেষ অনুভূতিতে অনুপ্রাণিত হয় তখন তাকে জাতীয়তাবাদ বলে।

জাতীয়তাবাদ: ইংরেজি ‘Nationality’ শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ হচ্ছে জাতীয়তা আর জাতি বা জাতীয়তা থেকেই জাতীয়তাবাদের ধারণা প্রসার লাভ করেছে। সংক্ষেপে বলা যেতে পারে জাতীয়তাবাদ হলো মানুষের আত্মিক ও মানসিক চিন্তাচেতনার ফসল।

প্রামাণ্য সংজ্ঞা: বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বিভিন্নভাবে জাতীয়তাবাদের সংজ্ঞা দিয়েছেন। যেমন-

জন স্টুয়ার্ট মিল (Jolin Stuat Mill) এর ভাষায়, “মানবজাতির সে অংশকে জাতীয়তাবাদী জনগোষ্ঠী আখ্যা দেয়া যায় যদি তারা নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক সহানুভূতির দ্বারা আবদ্ধ হয়, স্বেচ্ছায় পরস্পরের সাথে সহযোগিতা করে এবং নিজেদের একাংশের দ্বারা পরিচালিত সরকারের অধীনে থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করে।

আরনল্ড জে. টয়েনবি (A. J. Toyanbee) লিখেছেন, “জাতীয়তাবাদ কোনরূপ বস্তুগত বা যান্ত্রিক অনুভূতি নয়, বরং একপ্রকার আত্মিক ও মানসিক অনুভূতি।

অধ্যাপক লাস্কি (Prof Laski) বলেন, “জাতীয়তাবাদ এক ধরনের মানসিকতা। এটি দু’ধারায় পরিপুষ্ট। একটি প্রাচীন স্মৃতি সম্পন্ন এবং অপরটি পরস্পরের একত্রে বসবাস করার সম্মতি।

C. H. Hayes তাঁর ‘Essays of Nationalism’ গ্রন্থে বলেছেন, “
Nationalism consist of modern emotional fusion and exaggeration of two very cold phenomena-nationality and patriotism.”

উপসংহার: পরিশেষে আমরা বলতে পারি, জাতীয়তাবাদ হলো একপ্রকার মানসিক চেতনা যা কোন জনগোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ করতে সাহায্য করে। মূলত জাতীয়তাবাদের আদর্শের ভিত্তিতেই একটি জাতি তার অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম।