বাংলাদেশের যুবকদের উন্নয়নে যুবনীতির প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ কর।

অথবা, বাংলাদেশে যুবকদের উন্নয়নে যুবনীতির গুরুত্ব আলোচনা কর।

অথবা, বাংলাদেশে যুবকদের যুব উন্নয়নে যুবনীতির তাৎপর্যসমূহ তুলে ধর।

উত্তর: ভূমিকা: দেশের যুবকদের উন্নয়নে যুব সম্প্রদায়ের সম্পৃক্ততা অপরিহার্য, যুবকরা, দেশের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। অথচ সমাজের অধিকাংশ সমস্যা এদের জন্যই হয়ে থাকে। যুবকদের সমস্যার সমাধান এবং উৎপাদনমুখী শিক্ষা ও আত্মত্মকর্মসংস্থানের নিমিত্তে যুব উন্নয়ন নীতি প্রণয়ন করা হয়। এজন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থা যুবকদের উন্নয়নে কাজ করে থাকে।

যুবকদের উন্নয়নে যুবনীতির প্রয়োজনীয়তা: নিম্নে বাংলাদেশের যুবকদের উন্নয়নে যুবনীতির গুরুত্ব বর্ণনা করা হলো:

১. দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণঃ যুবনীতি ২০০৩ এ যুবকদের দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের সুযোগ রয়েছে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আত্ম-কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা বহু পূর্বে থেকেই চালু ছিল। যুব সমাজের উন্নয়নে প্রশিক্ষণ কর্মসূচির গুরুত্ব অত্যাধিক। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মতে ২০০৭ সালে প্রায় ২৯ লক্ষ যুব ও যুব মহিলাদের দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ দিয়েছে।

২. ঋণদান কার্যক্রমঃ যুবকদের উন্নয়ন কাজ করে যাচ্ছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের ঋণ কর্মসূচিতে সৃষ্টিলগ্ন থেকে ডিসেম্বর ২০০৭ পর্যন্ত ৭ লক্ষ ৩০ হাজার জন উপকারভোগীকে ঘূর্ণায়মান তহবিলসহ ৭৭৮ কোটি ৭৯ লক্ষ টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে।

৩. চাকরির সুযোগ দান: জাতীয় যুবনীতির ফলশ্রুতিতে যুব সম্প্রদায় সরকারি ও বেসরকারি চাকরিসহ বিদেশে চাকরি লাভে সক্ষম হচ্ছে। যুব উন্নয়ন কর্মসূচি সুফল ভোগ করছে এদেশের যুব সমাজ।

৪. যুব সংগঠনকে সহায়তাঃ যুব সংগঠনগুলোকে সরকারি সহায়তা প্রদানে যুবনীতির গুরুত্ব অপরিসীম। ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক সমীক্ষা অনুযায়ী ২০ একর পর্যন্ত খাস ও বদ্ধ জলাশয় যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত যুব সমবায় সমিতিকে জেলা/ উপজেলা পর্যায়ে গঠিত কমিটির মাধ্যমে ইজারা প্রদান করা হচ্ছে। ডিসেম্বরে, ২০০৭ পর্যন্ত ১২,৬১৩টি জলাশয় যুব সমবায় সমিতিসমূহকে ইজারা প্রদান করা হয়েছে।

৫. তথ্যপ্রযুক্তি প্রসারঃ যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়ন ও প্রসারে কাজ করেছে। দেশের ৬৪টি জেলার ৭০টি কেন্দ্রের মাধ্যমে নিশ্চিত বেকার যুবকদের ইন্টারনেট ও নেটওয়ার্কিসহ কম্পিউটার বেসিক কোর্স ও গ্রাফিক্স ডিজাইন কোর্স প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৭৬,৫৯৯ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।

৬. জাতীয় যুব কেন্দ্রঃ জাতীয় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সম্মেলন, সমাবেশ সেমিনার কর্মশিবির, গবেষণা, প্রকাশনা ও প্রশিক্ষণের জন্য জাতীয় পর্যায়ে জাতীয় যুব কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এটি মূলত একটি মানব সম্পদ উন্নয়ন, তথ্য ও গবেষণা কেন্দ্র।

৭. কারিগরি সহায়তা প্রকল্প: এইচ আইভি/ এইডস, সেনিটেশন কর্মসূচি, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, প্রজনন স্বাস্থ্য প্রভৃতি কর্মসূচিতে যুব সম্প্রদায়কে সম্পৃক্ত করার জন্য ইউএনএফপিএ এর আর্থিক সহায়তায় ৫০০টি যুবকেন্দ্রের মাধ্যমে কারিগরি সহায়তা প্রকল্প চালু করা হয়েছে।

উপসংহার: পরিশেষে বলা যায়, বাংলাদেশের যুবকদের উন্নয়নে তথ্য তাদের সমস্যা সমাধানে যুবনীতির তাৎপর্য অত্যাবশ্যক। যুবনীতি উপযুক্ত কারণে যুবকদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।