অথবা , সেন্ট অগাস্টিনের শান্তিতত্ত্ব সংক্ষেপে বিশ্লেষণ কর।
অথবা , সেস্ট অগাস্টিন শান্তি বলতে কী বুঝিয়েছেন?
অথবা , সেন্ট অগাস্টিন তাঁর শান্তিতত্ত্বে কী মতবাদ ব্যক্ত করেছেন? সংক্ষেপে লিখ।
উত্তর: ভূমিকা: মধ্যযুগের রাষ্ট্রচিন্তাবিদদের মধ্যে সেন্ট অগাস্টিন যেসব তত্ত্ব দিয়ে গেছেন তার মধ্যে শান্তিতত্ত্ব অন্যতম। সাধারণত যুদ্ধের অনুপস্থিতিকে শান্তি বলে অভিহিত করা হয়। কিন্তু অগাস্টিন শান্তির যে সংজ্ঞা প্রদান করেছেন তা ইতিবাচক। তার মতে, শত্রু ছাড়া যেমন যুদ্ধ হয় না তদ্রূপ মিলনে অংশীদার ছাড়া শাস্তি হয় না। তাঁর শান্তিনীতির মূলভিত্তি হলো ঐক্যতান। যা বিধাতার প্রতি সকল সদস্যের অভিন্ন প্রেমের বিশ্বজনীন নীতি হতে উৎসারিত। তাঁর এ শান্তি নীতি কেবল বিধাতার রাষ্ট্রেই সম্ভব, খ্রিস্টপূর্ব যুগের কোন প্যাগান রাষ্ট্রে এ শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। অর্থাৎ অগাস্টিনের। শান্তিনীতি খ্রিস্টধর্মকে কেন্দ্র করে আবর্তিত।
সেন্ট অগাস্টিনের শাস্তিতত্ত্ব: শান্তি সম্পর্কে সাধারণভাবে যে ধারণা প্রচলিত তা নেতিবাচক। সাধারণত যুদ্ধের অনুপস্থিতিকে শাস্তি বলে অভিহিত করা হয়। কিন্তু সেন্ট অগাস্টিন শান্তির যে সংজ্ঞা প্রদান করেছেন তা ইতিবাচক। তাঁর মতে, শত্রু ছাড়া যেমন যুদ্ধ হয় না, তেমনি সৌভ্রাতৃত্ব বা মিলনের অংশীদার ছাড়া শাস্তি হয় না। প্রাকৃতিক আইনের মাধ্যমে সকল মানুষ ও জীবজন্ত এ ইতিবাচক শান্তির অন্বেষণেই লিপ্ত থাকে। তিনি বলেছেন, বিশ্বশান্তির জন্য বিশ্বজনীন রাষ্ট্রের প্রয়োজন। কারণ এ রাষ্ট্রে বিশ্বের সকল মানুষ অভিন্ন এক ব্যবস্থার শরীক। এ রাষ্ট্রের সদস্যবৃন্দ নিজেদেরকে যতটুকু ভালোবাসে অন্যদেরকে ঠিক ততটুকু ভালোবাসে। মূলত অগাস্টিন যে শান্তিনীতির কথা বলেছেন তার মূলভিত্তি যে ‘ঐক্যতান’ তা বিধাতার প্রতি সকল সদস্যের অভিন্ন প্রেমের বিশ্বজনীন নীতি হতে উৎসারিত।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, ন্যায়নীতি ও শান্তির প্রশ্নে সেন্ট অগাস্টিন সিসেরোর অভিমত প্রতিধ্বনি করেন। সিসেরোর মতো তিনিও বলেছেন ন্যায়নীতি ব্যতীত কোন সঠিক রাষ্ট্র গঠিত হতে পারে না। যে রাষ্ট্রে ন্যায়নীতি নেই সেখানে শান্তি ও থাকতে পারে না।