সেন্ট টমাস একুইনাসের জীবনী সংক্ষেপে আলোচনা কর।

অথবা, সেন্ট টমাস একুইনাস সম্পর্কে কী জান?

অথবা, সংক্ষেপে সেন্ট টমাস একুইনাসের পরিচয় দাও।

অথবা, সেন্ট টমাস একুইনাস সম্পর্কে যা জান লিখ।

অথবা, সেন্ট টমাস একুইনাস কে ছিলেন?

উত্তরঃ ভূমিকা: মধ্যযুগের রাষ্ট্র যখন এক চরম স্থবির ও বিশৃঙ্খল অবস্থায় কাটছিল, যেখানে রাজতন্ত্র, রাজনীতি ও পোপতন্ত্র পরস্পর পরস্পরের সাথে সংঘর্ষে উপনীত ছিল, সে আগ্নেয়গিরির লাভামুখে বসে যিনি উপরিউক্ত তিনের সুন্দর সমন্বয় গড়ে তোলার লক্ষ্যে নিবেদিত ছিলেন তিনি হলেন টমাস একুইনাস। তিনি সিসিলি ও ক্যাম্পানিয়া রাজ্যের উপকণ্ঠে রোজাসিকায় এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে ১২২৫ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন।

বর্ণনা: সেন্ট টমাস একুইনাস (St. Thomas Acquinas) সিসিলির অন্তর্গত নেপলসে ১২২৭ (মতান্তরে ১২২৫) সালে সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পারিবারিক সম্পদের প্রাচুর্যে তিনি ছোটবেলায় বিলাসিতার মধ্যে পালিত হন। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে তিনি বিদ্যালয়ে গমন করেন। ১৯ বছর বয়সে সাধু একুইনাস পিতামাতার ইচ্ছার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসপস্থি রাজাদের ডোমিনিকান গোষ্ঠীতে যোগদান করেন। তার স্মৃতিশক্তি ছিল প্রখর। একবার তিনি যা পড়তেন, তা আর ভুলে যেতেন না। এটি তার শিক্ষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

তিনি বিশ্বের বেশ কয়েকটি সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন এবং শিক্ষকতা পেশা গ্রহণ করেন। এক সময় তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য প্যারিসে গমন করেন এবং তৎকালীন প্রখ্যাত দার্শনিক এলবাটের সান্নিধ্যে আসেন। অতঃপর তিনি গুরু এলবাটের সাথে কোলন নগরে যান এবং সেখানে চার বছর অতিবাহিত করেন। ১২৫২ খ্রিস্টাব্দে তিনি সোরবোনে ফিরে এসে ধর্মতত্ত্ব শিক্ষা শুরু করেন। সাত বছর পড়াশুনার পর তিনি এম. এ. ডিগ্রী লাভ করেন। জীবনের অবশিষ্ট সময় তিনি ইতালি ও প্যারিসে অতিবাহিত করেন। ১২৭৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি প্যারিস ত্যাগপূর্বক নেপলসের পথে লায়নস নামক স্থানে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৪৭ বছর।

উপসংহার: উপর্যুক্ত আলোচনার শেষে বলা যায় যে, একুইনাস মধ্যযুগের মত একটি অরাজনৈতিক পরিমণ্ডলে নিজের অবস্থান দখল করে পুরো সমাজ কাঠামোকে যেভাবে বিশ্লেষণ করে যুক্তিভিত্তিক আলোচনা করেছেন তা শুধু বিস্ময়করই নয়, রীতিমতো অবিশ্বাস্য। তার দর্শনের মূল বিষয় ছিল প্রতিদ্বন্দ্বী দুই শক্তিকে একত্রিত করা। তাই সেবাইনের ভাষায় বলা যায়, “একুইনাসের দর্শনের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় এই যে, এটি এমন এক প্রকার সর্বজনীন সংযোগ সাধনকারী এবং সর্ব পরিব্যাপ্তি পদ্ধতি যার প্রধান উদ্দেশ্য ঐক্য এবং সামঞ্জস্য প্রতিষ্ঠা করা।”