অথবা, ইয়াহিয়া খানের সার্বজনীন ভোটাধিকার কী? উল্লেখ কর।
উত্তরঃ ভূমিকা: পাকিস্তানের শাসনতান্ত্রিক ইতিহাসে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের শাসনামল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আইয়ুব খানের পতনের পর বাস্তব পরিস্থিতি উপলব্ধি করে তিনি বিভিন্ন সংস্কারের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। ইয়াহিয়া খান ১৯৭০ সালের ১ জানুয়ারি রাজনৈতিক কার্যক্রম চালু করেন। তিনি ক্ষমতা স্থানান্তরের প্রক্রিয়া হিসেবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথ বেছে নেন। এজন্য তিনি সার্বজনীন ভোটাধিকারের নীতি প্রণয়ন করেন। নিচে এ সম্পর্কে বর্ণনা করা হলো।
ইয়াহিয়া খানের সার্বজনীন ভোটাধিকার নীতি: আইয়ুব খান অবৈধভাবে পাকিস্তানের রাজনৈতিক ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত
হন। ক্ষমতায় এসে তিনি সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার হরণ করেন। তিনি উভয় প্রদেশ থেকে ৮০,০০০ হাজার গণতন্ত্রী নিয়ে নির্বাচকমণ্ডলী গঠন করেন। এর উদ্দেশ্যে ছিল পাকিস্তানে তার অবৈধ ক্ষমতার বৈধতা প্রদান এবং তার নিজের জন্য একটি দালাল শ্রেণি গড়ে তোলা। কিন্তু তার পতনের পর ইয়াহিয়া খান পাকিস্তানের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন এবং ৮ মাস পর ২৮ নভেম্বর জাতির উদ্দেশ্যে এক জরুরি ঘোষণা দেন যে, যত শীঘ্রই সম্ভব তিনি প্রাপ্তবয়স্কদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। এ নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাজ হবে দেশকে একটি ব্যবহারযোগ্য শাসনতন্ত্র প্রদান করা। তিনি এক ব্যক্তি এক ভোট নীতি প্রণয়ন করেন। জাতীয় পরিষদে প্রত্যেক প্রদেশ বা অঙ্গরাজ্যের জন্য জনসংখ্যার ভিত্তিতে আসনসংখ্যা বণ্টন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, ইয়াহিয়া খানের সার্বজনীন ভোটাধিকার নীতি ১৯৭০ সালের নির্বাচনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। সার্বজনীন ভোটাধিকারের ফলে সুষ্ঠু অবাধ ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়।